ঋণখেলাপিও হয়েও জয়ী হলেন তারা! টিবিটি টিবিটি নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৯:২১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১ | আপডেট: ৯:২১:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১ কাউছার আলম, পটিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন অনুযায়ী ঋণখেলাপি কেউ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন না। অথচ ঋণখেলাপির মামলার অন্তত দুই আসামি চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ঋণখেলাপি উক্ত দুইজন ব্যক্তি কাউন্সিলর পদে বিজয়ীও হয়েছেন। তারা হলেন পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নাছির ও ৬ নং ওয়ার্ডের শফিউল আলম।এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের দিন ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোহাম্মদ নাছিরের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার আরাফাত আল হোসাইনী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় মোহাম্মদ নাছিরের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ দিয়েছিলেন রিটার্নিং অফিসার মো. তারিফুজ্জামান। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন মোহাম্মদ নাছির। এরপর ২৬ জানুয়ারি আপিল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান নাছিরের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেন।বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত মোহাম্মদ নাছিরের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণার কারণ জানতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিবার কল করেও সাড়া মিলেনি।এদিকে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ঋণ গ্রহণ সংক্রান্ত মামলার সব তথ্য হলফনামায় উল্লেখ করেননি মোহাম্মদ নাছির। এছাড়া হলফনামায় মিথ্যা তথ্যও দিয়েছেন তিনি যা কাছে নাছির নিজেই স্বীকার করেছেন। আইন অনুযায়ী, হলফনামায় মিথ্যা বা ভুল তথ্যের জন্য মনোনয়নপত্র বাতিলের বিধান আছে। এমনকি নির্বাচিত হওয়ার পরও প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগও রয়েছে ইসির।হলফনামায় নাছির উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে অর্থঋণ আদালতে ২০১৫ সালে দায়েরকৃত তিনটি মামলা চলমান রয়েছে। মামলাগুলোর নম্বর হচ্ছে ১২৮/১৫, ৮৫২/১৫ ও ৬৩৯/১৫। এই তিনটির বাইরে অর্থঋণ আদালতে নাছিরের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা (১২৫/১৫) আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাছির।অন্যদিকে চট্টগ্রামের যুগ্ম মহানগর চতুর্থ আদালতে তিনটি দায়রা মামলা চলমান আছে বলে নাছির হলফনামায় তথ্য দিয়েছেন। মামলাগুলোর নম্বর ৩৮৯২/১৬, ৬৩৬/১৬ ও ১৭৪৬/১৬। নাছির বলেছেন, ‘জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে উক্ত তিনটি মামলা হয়েছে, ঋণ গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে নয়।’অথচ অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঋণ আদায়ের অংশ হিসেবে নাছিরের বিরুদ্ধে চেক প্রতারণার অভিযোগে এই তিনটি মামলা করেছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ৩৮৯২/১৬ নম্বর মামলায় টাকার পরিমাণ ৫ কোটি ৯১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ৬৩৬/১৬ নম্বর মামলায় টাকার পরিমাণ ৮ কোটি ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৫২৮ টাকা। ১৭৪৬/১৬ নম্বর মামলায় টাকার পরিমাণ ১১ কোটি ৬২ লাখ ২২ হাজার ২২২ টাকা।এদিকে হলফনামায় নাছির উল্লেখ করেছেন, তার কাছ থেকে খেলাপি ঋণ হিসেবে উত্তরা ব্যাংক ১ কোটি ৬ লাখ টাকা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৮ কোটি ৩৬ হাজার ৫৬৫ টাকা ও ব্র্যাক ব্যাংক ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা পাওনা আছে। গত ১৭ জানুয়ারি একদিনেই উক্ত তিনটি ব্যাংকের এসব ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন নাছির। আবার একইদিন হলফনামা সত্যায়িতও করেছেন তিনি। এতগুলো কাজ একদিনে করা কীভাবে সম্ভব হয়েছে, জানতে চাইলে মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘ঋণ পুনঃতফসিলের কাজ আরও আগে করা হয়েছে, হলফনামায় ভুলে ১৭ জানুয়ারি লেখা হয়েছে।’বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্টে ঋণখেলাপি হিসেবে উল্লেখ করার বিষয়ে মোহাম্মদ নাছির বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে ঋণ আছে, সেগুলো পুনঃতফসিল হয়েছে। এসব তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংক আপডেট করেনি, যার কারণে আমাকে ঋণ খেলাপি হিসেবে দেখানো হয়েছে।’ যদিও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একজন আইনজীবী জানিয়েছেন, নাছির ঋণ পুনঃতফসিল করতে পারেননি বলে তার কাছে তথ্য আছে।অন্যদিকে পটিয়া পৌর নির্বাচনের দিন ১ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নাছিরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আবদুল খালেককে তুলে নেয়া হয় বলে অভিযোগ উঠে। তাকে তুলে নেওয়ার জন্য তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নাছিরকে দায়ী করেন খালেক। তিনি অভিযোগ করে জানান, আশরাফ আলী শাহের মাজারে নামাজ পড়ে তার বাবা-মার কবর জেয়ারতে যাওয়ার পথে সকাল সোয়া ৬টার দিকে তাকে তিনটি মোটর সাইকেল ও একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে করে চোখে বেধে অস্ত্রধারীরা তুলে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় রিভলবার হাতে নাছির নিজে উপস্থিত ছিলেন। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ অšন্ত ছয়জন ঘটনা দেখেছেন। অস্ত্রধারীরা তার চোখ বেঁধে গৈরলা এলাকার ভেতরে নিয়ে একটি ‘সন্ত্রাসী বাহিনীর’ হাতে তুলে দেয়। ভোট ডাকাতি শেষ হলে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।১নং ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল খালেক বলেন, ‘ভোটের দিন আর কোনো প্রার্থীকে অপহরণ করা হয়েছিল কিনা আমার জানা নেই। ভোট শুরুর দুই ঘন্টা আগে আমি অপহরণের শিকার হয়েছি, আমার একজন এজেন্টকেও কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এরপরও প্রশাসন ভোটগ্রহণ করেছে। আমার এজেন্টের স্বাক্ষর ছাড়া কীভাবে ফলাফল প্রস্তত করা হল? এটাকে নির্বাচন বলা যায়?’ তবে আবদুল খালেককে তুলে নেয়া ও তার এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়ার ঘটনায় নিজের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন মোহাম্মদ নাছির। অন্যদিকে পটিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেয়া শফিউল আলমের বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে একটি মামলা চলমান আছে। মামলা নম্বর ৩০৫/১৮। এই তথ্যটি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি উল্লেখও করেছেন। এর বাইরে চেক প্রতারণার অভিযোগে ৫টি মামলা ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা চলমান আছে শফিউল আলমের বিরুদ্ধে। পাঁচলাইশ থানা ও আদালতে দায়ের করা প্রতারণার দুটি মামলায় খালাস পেয়েছেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন শফিউল আলম।অন্যদিকে পটিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে অংশ নেয়া শফিউল আলমের বিরুদ্ধে অর্থ ঋণ আদালতে একটি মামলা চলমান আছে। মামলা নম্বর ৩০৫/১৮। এই তথ্যটি নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় তিনি উল্লেখও করেছেন। এর বাইরে চেক প্রতারণার অভিযোগে ৫টি মামলা ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা চলমান আছে শফিউল আলমের বিরুদ্ধে। পাঁচলাইশ থানা ও আদালতে দায়ের করা প্রতারণার দুটি মামলায় খালাস পেয়েছেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন শফিউল আলম।ঋণখেলাপি উল্লেখ করে শফিউল আলমের প্রার্থিতা বাতিল করতে গত ১৮ জানুয়ারি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পটিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর চিঠি দেন অগ্রণী ব্যাংকের চাকতাই শাখার এসপিও/ব্যবস্থাপক আবদুল জলিল; সেখানে শফিউল আলমকে ঋণ খেলাপি উল্লেখ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) রিপোর্টও যুক্ত করে দেন তিনি।অগ্রণী ব্যাংকের ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘অত্র ব্যাংকের চাকতাই শাখার ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স শফিকুল আলম এন্ড ব্রাদার্স এর অনুকুলে এক কোটি টাকা (২০ লাখ টাকা সিসি-হাইপো ও ৮০ লাখ টাকা সিসি প্লেজ) ঋণ মঞ্জুরী প্রদান করা হয়। উক্ত ঋণের তৃতীয় পক্ষীয় জামিনদার ও বন্ধকদাতা শফিউল আলম। ঋণ হিসাবদ্বয় ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ খেলাপি ঋণ হিসেবে শ্রেণীকৃত হয়। বর্তমানে উক্ত ঋণ হিসাবদ্বয় এক কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার টাকা মন্দ ও ক্ষতিজনক ঋণ হিসাবে শ্রেণীকৃত। এমতাবস্থায় কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউল আলমের মনোনয়নপত্র ঋণ খেলাপি হিসেবে বাতিল করার সুপারিশ করা হল।’অগ্রণী ব্যাংকের ওই চিঠি ১৮ জানুয়ারি ‘রিসিভ’ করেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার। এছাড়া ঋণখেলাপি হওয়া ও অর্থ ঋণ আদালতে মামলা থাকার কারণে শফিউলের প্রার্থীতা বাতিল করতে গত ১৯ জানুয়ারি যাচাই-বাছাইয়ের দিন একই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মুহাম্মদ আবুল কাসেম রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন জানান। এরপরও রিটার্নিং কর্মকর্তা শফিউলের প্রার্থীতা বৈধ ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার কারণ তুলে ধরে রিটার্নিং অফিসার মো. তারিফুজ্জামান আদেশে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী শফিউল আলমকে জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি ঘোষণা করা হয়েছে। যেহেতু শফিউল আলম মূল ঋণ গ্রহীতা হিসেবে খেলাপি নন, উক্ত ঋণের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এবং স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ১৯(২) (ঝ) ও (ঞ) ধারা মতে জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি হওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তাই শফিউল আলমের মনোনয়নপত্রটি বৈধ ঘোষণা করিলাম।’রিটার্নিং অফিসার মো. তারিফুজ্জামান আদেশে আরও লিখেছেন, ‘মূল ঋণ গ্রহীতা ঋণের ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে পুনঃতফসিল করার জন্য আবেদন করেন। এরপর ২০২০ সালের ১ মার্চ ব্যাংক পরিচালনা পরিষদ ঋণটি পুনঃতফসিল করে মামলা সোলেহনামাসহ ৮ বছরের কিস্তিতে প্রদান করার জন্য অনুমোদন দেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবিতে অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত কাগজপত্রাদি যথাসময়ে প্রেরণ ও হালনাগাদ করা হয়নি।’অথচ অগ্রণী ব্যাংকের চাকতাই শাখার ব্যবস্থাপক আবদুল জলিল বলেন, ‘ঋণের ২ শতাংশ টাকা জমা দিয়ে ৮ বছরে ৯০ কিস্তিতে ঋণ পুনঃতফসিল করার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। কারণ শফিউল আলম যে জমি দেখিয়ে জামিনদার হয়েছেন, সেই জমি পরে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। যার ফলে শেষ পর্যন্ত ঋণটি পুনঃতফসিল হয়নি। অডিট রিপোর্টে ঋণ হিসেবে গুরতর আপত্তি (এসএল) থাকায় সোলেনামা মঞ্জুর হয়নি। এ কারণে ঋণ খেলাপি হিসেবে শফিউলের মনোনয়নপত্র বাতিল করতে আমরা সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি দিয়েছিলাম।’ব্যাংকের আপত্তির পরও ঋণ খেলাপি শফিউলের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণার কারণ জানতে চাইলে পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ের সময় কাগজপত্র দেখে আমার যেটা যুক্তিসংগত মনে হয়েছে, আমি সেই সিদ্ধান্ত দিয়েছি। আমার সিদ্ধান্ত যদি ভুল হয়, কারেকশন করার জন্য আপিল কর্তৃপক্ষ ছিল। আমাকে তো তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিতে হয়েছে। এটা বিচারিক বিষয়, আমার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে। ডিসি সাহেব যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৫-৬ দিন সময় পেয়েছেন, তিনিও আমার সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছেন।’এদিকে শফিউল আলমের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন কাউন্সিলর প্রার্থী মুহাম্মদ আবুল কাসেম। ২৬ জানুয়ারি আপিল শুনানিতে কাসেমের আইনজীবী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট ও অগ্রণী ব্যাংকের চাকতাই শাখার চিঠি অনুযায়ী কাউন্সিলর প্রার্থী শফিউল আলম একজন ঋণ খেলাপি। রিটার্নিং অফিসার স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর ১৪ ধারা ও স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন আইন ২০১৯ এর ১৯ ধারার বিধান যথাযথভাবে পর্যালোচনা না করে শফিউল আলমকে বৈধ প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।’ উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আপিল কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান শফিউল আলমের প্রার্থিতা বহাল রাখেন। এদিকে শফিউল আলমের প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে দেয়া আদেশে জেলা প্রশাসক উল্লেখ করেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট ও অগ্রণী ব্যাংকের প্রত্যয়ন অনুযায়ী শফিউল আলম জামিনদার হিসেবে ঋণ খেলাপি। স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন ২০০৯ এর ১৯(২) ধারা অনুযায়ী কাউন্সিলর পদে অযোগ্যতার তালিকায় খেলাপি ঋণ গ্রহীতা হিসেবে জামিনদার অন্তর্ভুক্ত নয় বিধায় পটিয়া পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী শফিউল আলমের মনোনয়নপত্রটি রিটানিং অফিসার কর্তৃক বৈধ ঘোষণা করা হয় যা যুক্তিযুক্ত। এমতাবস্থায় মুহাম্মদ আবুল কাসেমের আপিল আবেদন না-মঞ্জুর করা হলো।’এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী বলেন, ‘সম্পত্তি থাকলে যে কেউ তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ঋণের জামিনদার হতে পারেন। তার মানে দেনাটার দায় তিনি নিচ্ছেন। তিনিই ব্যাংকের কাছে দেনাদার হিসেবে চিহ্নিত। জামিনদার যিনি হয়েছেন, তার কাছ থেকে ব্যাংক ঋণ আদায় করতে পারবে। সুতরাং ব্যাংকের কাছে মূল ঋণ গ্রহীতার পাশাপাশি জামিনদারেরও দেনা হয়ে থাকে। সে হিসেবে খেলাপি ঝনের ক্ষেত্রে জামিনদারও নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না । আরও পড়ুন অভাবের তাড়নায় বিবিএ শেষ না করা জাবের এখন সফল উদ্দ্যোক্তা নববধূকে ফারহানাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ