রাজধানীতে বাস সংকট: মোড়ে মোড়ে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে ভোগান্তি চরমে টিবিটি টিবিটি নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: ৪:০৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৮ | আপডেট: ৪:০৬:পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৮ টিবিটি মেট্রোঃঈদের ছুটির সময় রাজধানীতে লোকসংখ্যা কম থাকায় সেভাবে সমস্যাটি বোঝা যায়নি, তবে ছুটি শেষে বাস সংকটের কারণে মানুষের যাতায়াতে ব্যাপক ভোগান্তি হচ্ছে।মোড়ে মোড়ে যাত্রীদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে দিনভর, এমনকি গভীর রাত অবধি। কিন্তু বাসে উঠতে গলদঘর্ম হচ্ছে যাত্রীরা। বিশেষ করে অফিস সময়ের আগে এবং ছুটির পর যাত্রাপথের শুরুতে বাসে আসন পাওয়া গেলেও মাঝ পথে বাসে উঠাই দায় হয়ে পড়েছে।দীর্ঘ অপেক্ষার পর কোনো বাস এলেও তাতে উঠতে হলে ধস্তাধস্তি করতে হচ্ছে যাত্রীদের। আর এতে যুবকরা গায়ের শক্তি খাটিয়ে যেভাবে উঠতে পারে, বয়স্ক এবং নারীরা তা পারছেন না।যাত্রী চাপে সিটিং সার্ভিস নামে চলা বাসগুলোতেও দাঁড়িয়ে যাত্রী বহন করা চলছে। আর পরিস্থিতি দেখে যাত্রীরাও তেমন প্রতিবাদ করছেন না। বাসের চালক ও সহকারীরা জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর লাইসেন্সহীন চালক ও ফিটনেস এবং অনুমোদনহীন বাস চলাচলের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। আর মামলার ভয়ে কাগজপত্রহীন গাড়ি রাস্তায় নামাচ্ছে না কোম্পানিগুলো। যেসব গাড়ির ফিটনেসের সমস্যা রয়েছে, সেগুলো ঠিকঠাক করতে কারখানায় পাঠানো হয়েছে। আর লাইসেন্স না থাকা চালকরা লাইসেন্সের আবেদন করেছেন। কিন্তু সেটি পাওয়ার আগে স্টিয়ারিংয়ে বসতে চাইছেন না তারা।সাভার থেকে মতিঝিল রুটে চলাচল করে ওয়েলকাম পরিবহন। তুলনামূলক ভালো সেবা দেয়ায় শুরু থেকে জনপ্রিয়তা পেয়েছে কোম্পানিটি। তবে বর্তমানে কোম্পানিটির অনেকগুলো গাড়ি রাস্তায় নেই।এই রুটে চলাচলকারী একটি বাসে চালকের সহকারী সোহেল রানা বলেন, ‘আমাদের কোম্পানির ৭০টির মতো গাড়ি আছে। কিন্তু এহন ২০ থাইক্যা ২৫টা বন্ধ। এইগুলো ঠিকঠাক করা চলতাছে।’মতিঝিল থেকে মোহাম্মদপুর রুটে চলাচলকারী মৈত্রী পরিবহনে একটি বাসের চালকের সহকারী জনি আলম জানান, তাদের কোম্পানির ৩২টি গাড়ি ছিল। বর্তমানে চলছে ১০টি। বাকিগুলো ত্রুটির কারণে নামছে না।মিরপুর রোডে চলাচলকারী খাজা পরিবহনের চালক মতিয়ার জানান, তাদের ১০ থেকে ১২টি গাড়ি বসা। মালিক এগুলো নামানোর চেষ্টা করছে।ইটিসি বাসের মালিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের পর থেকে রাজধানীতে বাস চালানোটা কঠিন হয়ে গেছে। বাস ধরেই পুলিশ মামলা দিচ্ছে। ড্রাইভার ও গাড়ির কাগজপত্র থাকলে গাড়ির গ্লাস ভাঙা বা ফাটা, এমনকি রঙ উঠার জন্য মামলা দিচ্ছে। ড্রাইভার ও মামলার টাকা দিতে দিতে সব শেষ। একজন মালিক বাঁচবে কীভাবে?’ ‘আমার ইটিসি কোম্পানিতে ৮০টি গাড়ি ছিল। কমতে কমতে ১০ থেকে ১২টি ছিল। তাও এখন চলছে না, এখন মাত্র চারটি গাড়ি কমছে।’শহিদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন ঝামেলার কারণে ইতিমধ্যে অনেকে বাসের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছে। নতুন বাস তো কেউ নামাবেই না। যা আছে সেটা কমতে থাকবে।’‘কিছু হলেই বাসের উপর সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমস্যা, কিন্তু তারা রাস্তায় এসে বাস ভাঙে, গার্মেন্টেসে বেতন হচ্ছে না, আন্দোলন করে তারা বাস ভাঙবে, সব ঝাল বাসের উপর। মালিকরা কীভাবে বাস চালাবে?’এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘বাস রাস্তায় নামানোর জন্য মালিক শ্রমিকরা কাজ করছে। যাদের গাড়ির কাগজপত্র ঠিক নাই সেটা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’এই পরিস্থিতিতে আবার ভাড়া নিয়ে দেখা দিয়েছে নতুন সমস্যা। রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে উত্তরায় কোচিং করতে যান নাহিদা খানম। তিনি জানান, তুরাগ পরিবহনের বাসে এই পথে আগে ভাড়া লাগত পাঁচ টাকা। এখন লাগছে ১৫ টাকা। ভাড়া কেন তিনগুণ হলো, তার কোনো ব্যাখ্যা দেন না পরিবহন শ্রমিকরা। আরও পড়ুন রাস্তায় ময়লা ফেলায় মেয়র আতিকের অভিনব প্রতিবাদ রাজধানীতে মেয়ের সামনেই বাসচাপায় মা নিহত