জাবির বি ইউনিটের ফল প্রকাশ

জুবায়ের আহমেদ, জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের 'বি' ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। সমাজবিজ্ঞান ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটে চান্সপ্রাপ্তিতে শিফটভিত্তিক চরম বৈষম্য দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকালে 'বি' ইউনিটভুক্ত সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং আইন অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পুরুষ এবং নারী ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক ১৯৩ টি করে মোট ৩৮৬ টি আসনের বিপরীতে আসনসংখ্যার প্রায় দশগুণ শিক্ষার্থীর পৃথক ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়ার ক্ষেত্রে শিফটভিত্তিক ব্যাপক বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে৷ প্রথম শিফট থেকে মাত্র ৩৪ জন জন চান্স পেলেও, পঞ্চম বা শেষ শিফট থেকে 'বি' ইউনিটে চান্স পেয়েছে ১৭৫ জন। এছাড়া দ্বিতীয় শিফট থেকে চান্স পেয়েছে ৫৯ জন, তৃতীয় শিফট থেকে ৫১ জন, চতুর্থ শিফটে ৬৭ জন চান্স পেয়েছে।গতকাল ১ আগস্টের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ শিফটের প্রতি শিফটে প্রায় ৯৬৭০ জন করে অংশগ্রহণ করে।
ভর্তিপরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিরা সবসময়ই বলে থাকেন, শিফট ভিন্ন হলেও, প্রশ্নপত্রের মান প্রায় সবসময়ই একই রকম থাকার কথা। সে হিসেব পাঁচটি শিফটের প্রতি শিফট থেকে প্রায় ২০% এর কাছাকাছি শিক্ষার্থী চান্স পাওয়ার কথা। কিন্তু এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৫ম শিফট থেকে চান্স পেয়েছে ১৭৫ জন। যা উক্ত ইউনিটে মোট চান্সপ্রাপ্তির ৪৫.৩৪%। অন্যদিকে প্রথম শিফটে চান্স পেয়েছে ৩৪ জন, যা মোট চান্সপ্রাপ্তির মাত্র ৮.৮১%।
এছাড়া মেধাতালিকার প্রথম দশজনের মধ্যে পাঁচজনই (২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৬ষ্ঠ, ৮ম) শেষ শিফট থেকে চান্স পেয়েছে।
‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী রাফি বলেন, "একাধিক শিফট থাকায় প্রশ্নপত্রের মান একই রাখা সম্ভব নয়। এই ইউনিটের শেষ শিফটের পরীক্ষার প্রশ্ন তুলনামূলক সহজ হয়েছে। এটা ঐ শিফটের পরীক্ষা দেয়া বন্ধুদের সাথে কথা বলেই বুঝতে পেরেছি। একাধিক প্রশ্নপত্র হওয়ায় স্বভাবতই কারও কাছে তুলনামূলক সহজ আবার কারও কাছে প্রশ্ন কঠিন মনে হয়েছে। সত্যি বলতে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সুষম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা নয়৷ এভাবে চলতে থাকলে কিছু শিফটের প্রকৃত মেধাবীদের ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।"
উল্লেখ্য, 'বি' ইউনিটভুক্ত 'সমাজবিজ্ঞান' ও 'আইন' অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৩৮৬ টি আসনের বিপরীতে ৪৮ হাজার ৪৪৮ জন ভর্তিচ্ছু আবেদন করেন। গণমাধ্যমকে দেয়া সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিনের তথ্যমতে 'বি' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আকবার হোসেন বলেন, ‘কয়জন চান্স পেল কয়জন চান্স পেল না এটা দেখার বিষয় না কয়জন মেধাতালিকায় স্থান করে নিল এটাই আসল। প্রতিটা পদ্ধতিরই কিছু ত্রুটি থাকে শিফট পদ্ধতিও এর বাহিরে নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম ও কে একাধিকবার ফোনে করেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয় নি।