অ্যাম্বুলেন্সে শুয়েই বোর্ড পরীক্ষা দিলো ভারতীয় ছাত্রী!

বোর্ডের পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময় রাস্তায় ধাক্কা মেরেছিল গাড়ি। পায়ে গুরুতর চোট লাগে দশম শ্রেণির ছাত্রীর। সেদিনই অস্ত্রোপচার করাতে হয়। খবর পেয়েই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মনে সংশয় তৈরি হয়েছিল, আদৌ কি পরের পরীক্ষাগুলো দিতে পারবে সে? কিন্তু মুবাশিরা সাদিক সায়েদ নিশ্চিত ছিল, বাকি পরীক্ষাগুলো সে দেবেই। সেই মতোই, অ্যাম্বুলেন্সে বসেই দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা দিতে দেখা গেল তাকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ালের খবরে বলা হয়, মুবাশিরা মহারাষ্ট্রের বান্দ্রার আঞ্জুম-ই-ইসলাম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। বর্তমানে বোর্ডের পরীক্ষা চলছে তার। প্রথম পরীক্ষা ছিল গত শুক্রবার। পরীক্ষা দিয়ে ফেরার সময় সেন্ট জোসেফ কনভেন্ট রোডের কাছে একটি গাড়ি তাকে ধাক্কা মারে। বাঁ-পায়ে গুরুতর চোট লাগে মুবাশিরার। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেই দিনই পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়।
আঞ্জুম-ই-ইসলাম স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, মুবাশিরা একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। তার দুর্ঘটনার খবর শুনে তাঁরা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন, আদৌ কি সে পরের পরীক্ষায় বসতে পারবে? কিন্তু হাসপাতাল থেকেই তাঁদের ফোন করে আশ্বস্ত করে ওই ছাত্রী জানায়, যেভাবেই হোক, বাকি পরীক্ষাগুলো দেবে সে।
এরপরেই স্কুলের তরফে যোগাযোগ করা হয় শিক্ষা দফতরের সঙ্গে। সব ঘটনা জানার পর বোর্ডের সেক্রেটারি সুভাষ বরাসে ওই ছাত্রীকে অ্যাম্বুলেন্সে বসে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেন। পরীক্ষা দিতে মুবাশিরার যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থাও নেওয়া হয় স্কুলের তরফে।
শিক্ষক শিক্ষিকারা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর তাঁরা মুবাশিরার সঙ্গে দেখা করার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। তখন দেখা যায়, পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থাতেই বই-খাতা নিয়ে দিব্যি পড়াশোনা করছে সে। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, যেহেতু ওই ছাত্রীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভাল নয়, তাই মুবাশিরার চিকিৎসার জন্য অর্থসাহায্যও করেছেন তাঁরা।
মুবাশিরা জানিয়েছে, বাকি পরীক্ষাগুলোও একইভাবে অ্যাম্বুলেন্সে বসেই দিতে চায় সে।