স্ত্রীকে হত্যার পর পাগলের ছদ্মবেশ ধারেন স্বামী

এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীতে পারিবারিক কলহের জেরে গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তার স্বামী আব্দুল লতিফ কাজী (৩৮) কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে কুষ্টিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজবাড়ী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবুল হোসেন বলেন, স্ত্রীকে হত্যার পর লতিফ পাগলের ছদ্মবেশ ধারণ করে কুষ্টিয়া রেলওয়ে স্টেশন থাকতেন। ওই এলাকায় মাঝে মধ্যে রাজমিস্ত্রীর সহযোগীর কাজও করতেন। কোন ঘর বা বাসা ভাড়া নেননি তিনি। দিন-রাত সব সময়ই রেলওয়ে স্টেশনেই থাকতেন। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই আমরা তাকে গ্রেফতারে চেষ্টায় ছিলাম।
অবশেষে সোর্সের মাধ্যমে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত ১১ টার দিকে কুষ্টিয়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। শুক্রবার বিকেলে ঘাতক লতিফকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আব্দুল লতিফ কাজী রাজবাড়ী সদরের বার্থা গ্রামের মৃত মতিয়ার কাজীর ছেলে ও তার স্ত্রী বিউটি বেগম ছিল মহিষ বাথান গ্রামের বিল্লাল মোল্লার মেয়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীকে হত্যার পর পাগলের ছদ্মবেশ ধারণ করে কুষ্টিয়া রেলওয়ে স্টেশন থাকতেন তিনি। লতিফ ও বিউটি দম্পতির পঞ্চম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ে মিম ও চার বছর বয়সী এক ছেলে মুসা রয়েছে।
হত্যার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লতিফ ও বিউটির মেয়ে মীম জানায়, গত ১৮ জানুয়ারি রাত ৮ টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে তার বাবা, মা ও ছোট ভাই ঘরের এক রুমে ঘুমান। সেও অন্য রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত দুইটার দিকে সে তার মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে ওঠে। পাশের রুমে গিয়ে দেখে তার বাবা তার মাকে চাপাতি দিয়ে কোপাচ্ছে। এ দৃশ্য দেখে সে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন তার বাবা দৌড়ে পালিয়ে যান।
বিউটির বাবা বিল্লাল মোল্লা জানান, লতিফ স্টক মালের (ধান, পাট, গম, সরিষা) ব্যবসা করতো। সাংসারিক সামান্য কথা কাটাকাটি হলেও লতিফ তার মেয়েকে মারধর করতো। ১৮ জানুয়ারি রাতে লতিফ তার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরদিন তিনি লতিফকে একমাত্র আসামি করে রাজবাড়ী সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। লতিফ গ্রেফতার হওয়াতে তিনি কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। তবে তার মেয়ে হত্যার ন্যায় বিচার চান তিনি।