সাতকানিয়ায় নেমে গেছে বন্যার পানি, ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন
রমজান আলী, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ বন্যার পানি কমতে থাকায় অনেক এলাকায় বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করেছে বানভাসি মানুষ। তবে তাদের ওপর জেঁকে বসেছে নানা ধরনের সংকট, দুর্ভোগ। পানির তোড়ে অনেকের বাড়িঘর হয় ভেসে গেছে, নয়তো ভেঙে পড়েছে। একই সঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে ঘরে থাকা খাদ্যশস্য ও আসবাবও।
পচে গেছে জমির ফসল। টিউবওয়েল ও কাঁচা টয়লেটগুলো বিধ্বস্ত। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের রোগব্যাধি। এলাকার রাস্তাঘাটও ক্ষতিগ্রস্ত।
(৭ আগস্ট) থেকে সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাড়িঘর, ফসলি জমি ও পথঘাট ডুবে যায়। মানুষজন ঠাঁই নেয় উঁচু সড়ক এবং পরিত্যক্ত মার্কেট, যেখানে গবাদি পশুর সঙ্গে খেয়ে না খেয়ে গাদাগাদি করে বাস করছে সবাই।
গত ৯ আগস্ট থেকে পানি কমতে থাকায় বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। কিন্তু ফিরেই দেখতে পাচ্ছে বাড়িঘর আর আগের অবস্থায় নেই, হয় ভেঙে পড়েছে, নয়তো পানি ও কাদায় মাখামাখি হয়ে আছে।
বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মার্কেট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে ১৭ টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভা সহ অন্তত তিন লাখ মানুষ। ইতোমধ্যে পানি কমলেও জলাবদ্ধতা রয়ে গেছে গ্রামগুলোতে। এখনো অনেক জায়গা পানির নিচে। ফলে বন্যার্তরা বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না।
ঢেমশার ইউনিয়নের ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি নরুল আলমের দাবি, তাদের দীর্ঘ জীবনে এমন ভয়াবহ বন্যা আর দেখেননি তারা। অনেকে দাবি করছেন, রেললাইনে অপরিকল্পিতভাবে কালভার্ট হওয়ার কারণে বন্যার সময় পানি নিচে নেমে যেতে পারেনি।
কৃষকরা জানিয়েছে, বন্যায় দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে আছে ফসলের জমি। বীজতলা পচতে শুরু করেছে এদিকে ফসল হারিয়ে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা নেমে এসেছে। বেশির ভাগ কৃষক এনজিও, ব্যাংক অথবা চড়া সুদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণে টাকা এনে ধানের আবাদ করেছে। এখন বন্যায় ফসলহানিতে তারা দুই চোখে অন্ধকার দেখছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাতকানিয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক গুলো পানির প্রবল স্রোতে বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে এবং বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়।