শোক দিবসে দোয়ারাবাজার ডিগ্রি কলেজে বিদায়ী সংবর্ধনা, এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড়
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: জাতীয় শোক দিবসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে আনন্দ উৎসব হয়েছে দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজে। এনিয়ে এলাকা জুড়ে আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রীয়া সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়। ওইদিন দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন সরকারি/বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক/সাংস্কৃতিক সংগঠন, আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে।
ওইদিন দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসের কাছাকাছি স্থানীয় মা-জননী কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে ছাতক ও দোয়ারাবাজার আসনের এমপি মুহিবুর রহমানের উপস্থিতিতে জাতীয় শোক দিবস অনুষ্ঠান চলাকালে দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজে পালিত হয় পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এক পর্যায়ে ওই অনুষ্ঠান আনন্দ উৎসবে মেতে উঠে এবং পরীক্ষার্থীরা রঙ ছোড়াছুড়ির আনন্দ হোলি খেলায় মেতে উঠে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে প্রিন্সিপালের উপস্থিতিতে সরকারি কলেজে কিভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ও আনন্দ উৎসব হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়।’
উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা চিত্তরঞ্জন দাশ বলেন, ‘জাতীয় শোক দিবসে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে শিক্ষার্থীদের রঙ খেলায় আমরা মর্মাহত হয়েছি। এটা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হাসান হৃদয় বলেন, ‘শোক দিবসের দিন কলেজে বিদায়ী সংবর্ধনার আয়োজন করায় আমরা ব্যথিত হয়েছি।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী চৌধুরী বাবু বলেন, ‘জাতীয় শোক দিবসের দিনেই বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করতে হবে এরকমতো কোনো কথা ছিলনা। বিষয়টি দুঃখজনক।’
এব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার সরকারি ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল হক বলেন, ‘শোক দিবস পালন করেই পরবর্তীতে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের বাইরে গিয়ে রঙ মাখামাখি করেছে। এতে দোষের কিছু দেখছিনা। আপনারা নিউজ করতে পারেন।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, ‘শোক দিবসে বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’