শিশুকে হত্যার পর লুকানো হয় কচুরিপানার নিচে, সৎপিতার মৃত্যুদণ্ড
ব্যুরো চীফ, কুমিল্লা: কুমিল্লায় সাত বছরের এক শিশুকে হত্যার পর লুকানো হয় কচুরিপানার নিচে। এ ঘটনায় শিশুটির সৎপিতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন কুমিল্লা আদালত। বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
শিশু আরাফাত হোসেন বাপ্পীকে হত্যার দায়ে সৎপিতা মো. সেলিম ওরফে রুবেলের (২৫) বিরুদ্ধে এই রায় দেওয়া হয়। রুবেল কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ধনাজোরা গ্রামের মো. জলিল হকের ছেলে।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে তিনি জানান, ২০২২ সালের ১৫ এপ্রিল সকালে শিশু বাপ্পীকে তার মামার বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানাধীন তারাপুর গ্রাম থেকে অপহরণ করেন তার সৎ বাবা সেলিম। পরে সে তার বাড়ির অদূরে ধনাজোরা গ্রামের জলাশয়ে নিয়ে বাপ্পীর গলায় রশি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ কচুরিপানার নিচে পানিতে ডুবিয়ে রাখে।
এ ঘটনার পর বাপ্পীর নানা জালাল মিয়ার কান্নাকাটি দেখে ঘাতক সেলিম ওই বছরের ১৭ এপ্রিল সেই মরদেহ গুম করার ঘটনাস্থল দেখিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। পরে ওই রাতে পুলিশ উপজেলার ধনাজোর গ্রামের একটি জলাশয় থেকে শিশু বাপ্পীর মরদেহ উদ্ধার করে। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে সেলিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল নিহতের মামা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার তারাপুর গ্রামের মো. জালাল মিয়ার ছেলে মো. আল-আমিন বাদী হয়ে রুবেলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহীনুর ইসলাম আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ও আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে আদালত।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন। এতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মনে করি।