ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়া সেই গ্রাম পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটন, মূল ঘাতক গ্রেপ্তার
এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির চর আড়কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়া গ্রাম পুলিশ রণজিৎ কুমার দে’র (৪০) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত মুক্তার হোসেন (২৮) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি.এম.আবুল কালাম আজাদ।
পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় মুক্তার নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে মুক্তার। এছাড়া তাদের ব্যবহৃত একটি ইজিবাইক ও চুরি হওয়া দুইটি ছাগলের মধ্যে একটি ছাগল উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ৬ জানুয়ারি সকালে চর আড়কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের একটি মেহেগুনি বাগান থেকে রনজিৎ-এর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ৮ জানুয়ারি দুপুরে নিহতের স্ত্রী রিতা দে বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
নিহত রণজিৎ কুমার দে বালিয়াকান্দি উপজেলার চর আড়কান্দি গ্রামের শিবেন্দ্র দে’র ছেলে। আর গ্রেপ্তার মুক্তার শেখ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ঝাউকাঠি গ্রামের আজিজ শেখের ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পরবর্তীতে তদন্ত করতে গিয়ে আমরা হত্যাকাণ্ডের ক্লু পাই। মূলত ছাগল চুরি দেখে ফেলাকে কেন্দ্র করে রনজিৎকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দিন রাতে তিনজনের একটি দল পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে দুইটি ছাগল চুরি করে ইজিবাইকে নিয়ে এসে চর আড়কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনে অবস্থান নেয়। রনজিৎ দে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যখন বাইরে বের হন তখন তিনি বিষয়টি দেখে ফেলেন। এ সময় চোর চক্রটি রনজিৎ দেকে টাকার লোভ দেখায়। কিন্তু রনজিৎ দে তাতে রাজি না হয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানাতে চাইলে তখন রনজিৎকে গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তারা রনজিৎ-এর মরদেহটি পাশের এক মেহেগুনি বাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মুকিত সরকার, বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান খান, বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের এসআই রাজিবুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।