শান্তিগঞ্জে ৫ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড ১২ গ্রাম : আহত শতাধিক, ১২শত ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত
সোহেল তালুকদার, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলায় হঠাৎ পাঁচ মিনিটের ঝড়ে ১২টি গ্রাম লণ্ডভণ্ড এবং ঘর বাড়ী বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এর মধ্যে দুই ইউনিয়নের প্রায় ১২ শতাধিক ঘর-বাড়ি ভেঙে যাওয়া ও বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে ঝড়ের কবলে পড়ে প্রায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আহতদেরকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতরদেকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ ওই গ্রামগুলো হলো- জয়কলস ইউনিয়নের পাবর্তীপুর, কামরূপদলং, আস্তমা, সদরপুর ও পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ইনাতনগর, রায়পুর, চন্দ্রপুর, কাদিপুর, কান্দিগাঁও ও শত্রুমর্দন গ্রাম। গতকাল রবিবার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে এ প্রলঙ্কারী ঘূর্ণিঝড় হয়।
সোমবার (১ এপ্রিল) সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী আলহাজ্ব এম এ মান্নান এমপি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার সদরপুর, রায়পুর কামরূপদলং, চন্দ্রপুর সহ তার আশপাশ এরাকার ঘর ও বসত বাড়ী পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী, শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা, শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী মোক্তাদির হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার শাহাদাত হোসেন ভূইয়া, শান্তিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সাদাত মান্নান অভি, ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার, শান্তিগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদার সহ প্রমুখ।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ শ্যামল দাস জানান, নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ঘর বাড়ী হারিয়েছি। এখন ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছি। আবারও ঝড়েরর কবলে পড়ে আমার ঘর বাড়ী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার জানান, তাঁর ইউনিয়নের ইনাতনগর, রায়পুর, কাদিপুর, কান্দিগাঁও ও শত্রুমর্দন গ্রামে প্রায় ৫০০ ঘর বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়েছে, গাছপালা ভেঙেছে বেশি।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জানান, ঝড়ের পরপরই স্থানীয় পাগলা বাজারে অবস্থান করে সেহরীর সময় পর্যন্ত ঝড়ের কবলে পড়ে আহত ২৫/৩০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ সকাল হাসপাতালে প্রায় ৫০/৬০ জন আহতদেরকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে ঝড়ের কবলে পড়ে আহত একজন অন্ত:স্বত্ত্বা নারী ও একজন পুরুষ রয়েছেন। গুরুতর আহতদেরকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা জানান, ঝড় হয়েছে, ঝড়ের কবলে পড়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। আহতদেরকে চিকিৎসার জন্য পাগলা বাজারে রাতেই অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প চালু করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ভোর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছ। ইতিমধ্যে প্রায় ২৫০ জনের মতো রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ৭/৮টি টিম মাঠে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাল বিতরণ করা হয়েছে। ঢেউ টিনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে।