সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই: রাবি ছাত্র উপদেষ্টা
মাহবুব বিল্লাহ, রাবি প্রতিনিধি: ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ১৩ এপ্রিল সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা এম.তারেক নূর পদত্যাগ করার পর তাঁর জায়গায় নতুন ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদকে নিয়োগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
এদিকে ছাত্র উপদেষ্টা থাকাকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা এম তারেক নূরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের প্রায় ১৪ লাখ টাকা আগাম গ্রহণ করে সমন্বয় না করার অভিযোগ উঠেছে। সবকিছু মিলিয়ে নতুন দায়িত্ব পেয়ে কতটুকু চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছেন নবাগত ছাত্র উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন দি বাংলাদেশ টুডে'র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি- মাহবুব বিল্লাহ।
দি বাংলাদেশ টুডে:
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। আপনি দায়িত্ব পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের আস্থার জায়গাটাকে কিভাবে দেখছেন?
ছাত্র উপদেষ্টা:
আমি আমার দায়িত্বের জায়গা থেকে যেটা মনে করি শিক্ষার্থীদের সকল সমস্যা সমাধান হয়তো আমরা করতে পারবো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও না আমিও ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরও না। তবে শিক্ষার্থীদের লজিক্যাল কোন সমস্যা হলে সেটা সমাধান করার জন্য ছাত্র উপদেষ্টা হিসেবে আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করছি এবং সেভাবে কাজ করে যাবো।
প্রশ্ন:
শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার জন্য যেহেতু আপনি দায়িত্ব পেয়েছেন, সেক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব কোন পরিকল্পনা আছে কি না যেটা শিক্ষার্থীদের কল্যাণ বয়ে আনবে?
ছাত্র উপদেষ্টা:
কোন একক পরিকল্পনায় একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয় একটা কাঠামোর মধ্যে চলে। সে কাঠামোর একটি অংশ হিসেবে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর কাজ করবে তবে আমার নিজস্ব কিছু ভাবনা আছে যেমন আমি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটু গুরুত্ব দিতে চাই। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাই যেটা শিক্ষার্থীদের জন্য ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রভোস্ট কাউন্সিলেও আমি কথা বলেছি এ বিষয়ে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিয়ে আগাতে চাই। শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাড়াতে পারলে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহী করতে পারলে বিনোদনের জায়গাটা ফিরে আসবে সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডও কমে যাবে।
প্রশ্ন:
স্যার, শিক্ষার্থীদের গবেষণায় ক্ষেত্রে উদ্ভুদ্ধ করতে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর থেকে কি কি সুবিধা প্রদান করা হয়? বা এমন কোন আয়োজন প্রশাসন থেকে করার পরিকল্পনা আছে কি না যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা গবেষণায় আগ্রহী হবে?
ছাত্র উপদেষ্টা:
গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নেওয়ার দায়িত্ব স্ব স্ব বিভাগের। এক্ষেত্রে তাদেরকে কোন সমস্যা হলে লিংক আপ করে দেওয়া যায় তবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিভাগে ই পালন করে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন এক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে। দরকার হলে ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তর সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
প্রশ্ন:
একটি ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে হলগুলোতে নৈরাজ্য, সিট বানিজ্য, শিক্ষার্থীদের সিট থেকে নামিয়ে দেওয়া ইত্যাদি ঘটনার অভিযোগ আছে, বারবার অভিযোগ উঠলেও সেটার কোন সুরাহা হয়না। যেহেতু হলে সিট পাওয়া ছাত্রদের একটি অধিকার এবং সেটা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে এ সমস্যাটি নিয়ে আপনি কোন ভাবে সমাধানের পরিকল্পনা করছেন কি?
ছাত্র উপদেষ্টা:
আসলে হলগুলোগে এ সমস্যা টা অস্বীকার করার মতো না এবং এ কালচারটি অনেকদিন ধরে হয়ে আসছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এটা নিয়ে কাজ করার। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করতে চাই। যে চর্চা টা চলছে সেটা দ্রুত অবসান হবে এরকমটা বলতে পারবো না তবে আমরা এটি নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন:
মাদকদ্রব্য সেবনের হার ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের ক্রমশ বেড়েই চলেছে বলে প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। স্যার, শিক্ষার্থীদের মাদকসেবন থেকে দূরে রাখতে আপনার কোন পরিকল্পনা যদি বলতেন?
ছাত্র উপদেষ্টা:
এটি একটি জাতীয় সমস্যা। আমরা এটার উৎস হয়তো বন্ধ করতে পারবো না তবে মাদকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাজ করছে। সম্ভবত আগামী মাসের শুরুতে আমরা এ বিষয়ে একটি সেমিনার করার পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি আগামিতে সকলকে ডোপ টেস্টের আওতায় আনার পরিকল্পনা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ ১৯৯৭ সালে রাবিতে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষ ও সিন্ডিকেট সদস্যসহ অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচিত সদস্য।