কৌশল অবলম্বন করলে বিড়ি সেক্টরে হাজার কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি রোধ করা সম্ভব
রংপুর প্রতিনিধি: বিড়ি সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা উদ্যোক্তা সংগঠন, সম্মিলিত সাংবাদিক জোট ও রংপুর বিভাগ বিড়ি মালিক সমিতির এর উদ্যোগে গত ১৭ ই সেপ্টেম্বর , বিকাল ৫ ঘটিকায় সমিতির কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংবাদিক জোট এর মহাসচিব মোঃ ইকবাল হোসেন সরদার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রংপুর বিভাগ বিড়ি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম ডিনার
আলোচনায় সভায় তিনি বলেন ,ইতোমধ্যে আপনারা অবগত আছেন বিভিন্ন গনমাধ্যমে বিড়ি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উঠে এসেছে । বিড়ি সেক্টরের রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ হয়নি। প্রতিবছর বিড়ি সেক্টরে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ ফ্যাক্টরির মালিকগন রাজস্ব ফাঁকিতে নুতন নুতন কৌশল অবলম্বন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এই ধরনের অনিয়ম ও জাল ব্যান্ডরোল বন্ধের বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন আরও বলেন,বিড়ি গায়ে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ব্যান্ডরোল নির্ধারন করা হয়েছে যা,ভ্যাট ট্যাক্স সহ ৯ টাকা ১০ পয়সা।পাশাপাশি প্রতিটি বিড়ির প্যাকেটের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে অর্থাৎ ৬ টাকা ৭ টাকা ৮টাকা ১০ টাকা ১৩ টাকা মূল্যের বিড়িতে বাজারে সয়লাব।সরকারের দেয়া নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে জাল ব্যান্ডরোল এবং ব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ব্যবহৃত প্যাকেটের গায়ে লাগিয়ে বাজারজাত করে আসছে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।
এতে করে নামিদামি ব্র্যান্ডের বিড়ি ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধের উপক্রম হয়েছে। জাল ব্যান্ডরোল যাতে বিড়ি প্যাকেটে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন বিড়ি তৈরির সিগারেট পেপারের সাথে সরকারি রাজস্ব ৯ টাকা ১০ পয়সা সংযুক্ত করে দেওয়া হলে, এতে করে বিড়ির প্যাকেটে জাল ব্যান্ডরোল বা ব্যবহৃত হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।জাল ব্যান্ডরোল লাগানো বন্ধ করতে হলে বিড়ি উৎপাদনে ব্যবহৃত সিগারেট পেপার তৈরির মিলস্ রয়েছে দুইটি প্রতিষ্ঠান। তা হলো আফিল পেপার মিলস্ লিমিটেড এবং বসুন্ধরা পেপার মিলস্ লিমিটেডে।
এই দুইটি প্রতিষ্ঠানে বিড়ির তৈরির সিগারেট পেপার উৎপাদন করে। বিড়ি তৈরির সিগারেট পেপার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান দুটি কে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া জরুরি বলে তিনি জানান। এতে বিড়ি সেক্টরে সরকারের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ বেড়ে যাবে এতে কোন সন্দেহ নেই। অর্থাৎ মাঠ পর্যায় রাজস্ব কর্মকর্তাদের অহেতুক হয়রানি ও সময় অপচয় এবং কষ্ট লাগব হবে বিশেষ করে বিড়ি সেক্টরে।
জরুরী ভিত্তিতে এই কৌশল অবলম্বন করলে কোটি কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। অপরদিকে ব্যান্ডরোল উৎপাদনে যে জটিলতা অর্থাৎ উৎপাদন খরচ, কাগজ,কালি, জনবল, পরিবহন খরচ,
পোষ্ট অফিস থেকে উত্তোলন অর্থাৎ রাজস্ব আয়ের অর্ধেক এই ধরনের কর্মকাণ্ডে ব্যয় হয় বলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন উঠে এসেছে। এছাড়া কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কর্মকর্তাদের বিড়ি ফ্যাক্টরিতে প্রতি সপ্তাহে বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ নিয়ে উপস্থিত হতে হবে না বা হাটবাজারে বা অভিযান পরিচালনা করে নকল বিড়ি ব্যবসায়ীদের আটক করার দরকার হবে না বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে।
রাজস্ব কর্মকর্তাদের বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের যানবাহন সংকট, লোকবল সংকটসহ নানান ধরনের সমস্যা সমাধান সহজীকরণ হবে। রাজস্ব আহরণ হবে সবচেয়ে সহজে এবং স্বচ্ছতায় পরিণত হবে। এই বিষয়ে দেশের বিভিন্ন বিড়ি মালিক সমিতি, স্থানীয় প্রশাসন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবং মিডিয়া সংগঠন সম্মিলিত সাংবাদিক জোট যৌথভাবে সমন্বয় করে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির এবং জালিয়াতির তথ্য সংগ্রহ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর উপস্থাপন করা হয়েছে বলে বিড়ি সংগঠনের নেতা তরিকুল ইসলাম ডিনার বলেন। এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে তা হলো বিড়ি তৈরির সিগারেট পেপারের সাথে ব্যান্ডরোলের নির্ধারিত ৯ টাকা ১০ পয়সা সংযুক্ত করা এবং বিড়ি উৎপাদনকারী সিগারেট পেপার তৈরির পেপার্স মিলস্ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রাখা র ব্যবস্থা গ্রহণ করা। তাহলেই সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করে।