অতিরিক্ত মূল্যে ওষুধ বিক্রির প্রতিবাদ করায় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা!
শেখ দীন মাহমুদ, খুলনা (পাইকগাছা) প্রতিনিধি: খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আসামিদের আটকের দাবিতে বুধবার (১৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন। অপরদিকে একই সময়ে হাসপাতালের সামনের ব্লু স্কয়ার মার্কেটের ওষুধ ব্যবসায়ীরাও বিক্ষোভ শুরু করেন। একই সময়ে খুমেক হাসপাতালের সামনে দু’ পক্ষ পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ শুরু করেন।
এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বহিরাগতরা আকষ্মিক তাদের ওপর হামলা চালালে ওই দিন তারা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে রাত ১২টার মধ্যে ঘটনায় জড়িত সব আসামিদের আটকের কথা জানায়। তবে পুলিশ কথা রাখেননি। সুষ্ঠু বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খুমেক হাসপাতালের সামনের ব্লু স্কয়ার মার্কেটের ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়।
এদিকে বেলা ১১টার দিকে আন্দোলন শুরুর পর বেলা ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন খুমেক হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ মেহেদী নেওয়াজ।
এসময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ তোমাদের উপর হামলার পর থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আছি। তোমাদেরকে চিকিৎসা করিয়েছি। থানায় মামলা করার জন্য তোমাদের সঙ্গে ছিলাম। পরবর্তী সময় তোমরা যেভাবে আমাদের চাইবে সেভাবে তোমাদের সঙ্গে থাকব।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ব্লু স্কয়ার মার্কেটের ‘মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্নার’ নামের একটি ওষুধের দোকানে ঘটনার দিন সোমবার ব্যাচ কে-৩১-এর এক শিক্ষার্থী ওষুধ কিনতে যান। এসময় ওই দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করলে ওই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর অন্যান্য শিক্ষার্থী গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা একত্রিত হয়ে আকষ্মিক হামলা চালিয়ে ২০ জন শিক্ষার্থীকে আহত করেন।
অপর দিকে দোকানদাররা এ ঘটনার পাল্টা অভিযোগ করে জানান, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কিনে তিনি মোট মূল্যের ওপর ১০ শতাংশ কমিশন চান। এসময় দোকানদার কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দু’জনই বাগবিতণ্ডায় জড়ান। পরে মেডিকেল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে মার্কেটে এসে দোকানপাট ভাঙচুর চালায়। হামলার পর সংঘাত এড়াতে ওষুধ ব্যবসায়ীরা আপাতত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানান তারা।
ঘটনার পর ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফায় সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
অপরদিক ঘটনার পর খুমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেন।
এ ঘটনায় চিকিৎসক জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, ‘আমাদের ওপর যারা হামলা করেছে, তারা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।’
এ ব্যাপারে ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক জিল্লুর রহমান জুয়েল বলেন, ‘হামলার ঘটনায় তাদের নয়জন ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষর্থীরা একটি দোকানের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে। মার্কেটের ‘অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তারা থানায় মামলা করলে পাল্টা মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।’
তাছাড়া শিক্ষার্থীদের সাথে ‘যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়াতে ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকানগুলো বন্ধ রেখেছেন। ঘটনায় আজ বিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সাথে তাদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। সেখানে বসে তারা ঘটনাটির মীমাংসার জন্য চেষ্টা করবেন বলেও জানান ঔষধ ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির এ পরিচালক।