স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা, স্বামীর কঠিন শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
মামুন মোল্লা, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ চুুয়াডাঙ্গায় আনোয়ার নামের এক লন্ড্রী দোকানী তার সন্তানের সামনে তার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী গৃহবধূ নয়ন তারা কে মাথায় লোহার রড দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে গা ঢাকা দিয়েছে। এমতাবস্থায় এ ঘটনার ৭ দিন পার হলেও পুলিশ এখনও আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়নি ।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ১নং ওয়ার্ডের সুমিরদিয়া কলোনীপাড়ায় নিজ বাড়িতে পারিবারিক কলহের জেরধরে গৃহবধূ নয়নতারা কে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে তারই স্বামী আনোয়ার হোসেন। এরপর থেকে পালাতক রয়েছে সে। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ তাকে আটক করতে জোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন ।
এদিকে গৃহবধূ নয়ন তারার হত্যাকারী আনোয়ারসহ সকল আসামীদের আটক ও ফাঁসির দাবিতে মানবন্ধন করেছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় মেহেরপুর সদর থানার পিরোজপুর গ্রামের স্বজনরা ও নিহতের মেয়ে টুনি চুয়াডাঙ্গা চৌরাস্তার মোড়ে ও সদর থানার সামনে এ মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।
পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরের সামনে এক মানবন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে হত্যাকারীকে কঠিন শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি প্রদান করে।
এসময় জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা বিচার প্রার্থী নিহত নয়ন তারার মেয়ে টুনি ও তার স্বজনদের শান্ত করেন এবং সুবিচার ও আসামীদেরকে আটকের বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ৯ টায় সুমিরদিয়া কলোনীপড়ায় নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় তার একমাত্র বড় মেয়ে স্কুল পড়ুয়া নবম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রী জান্নাতুল আরা টুনি ঠেকাতে গেলে তাকেও লোহার রড দিয়ে মাথায় মেরে গুরুতর আহত করে ঘাতক পালিয়ে যায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃত নয়ন তারার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে দাফন কার্যের জন্য লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন।
নিহত নয়ন তারার মেয়ে জান্নাতুল আরা টুনি ও স্বজনরা এবং চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, লন্ড্রী দোকানী আনোয়ারের সাথে দীর্ঘ ১৭ বছরের সংসার নয়ন তারার। তবে বিবাহের পর থেকে আনোয়ার তার স্ত্রী নয়ন তারাকে প্রায় মারধর করত এবং এরই জের ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায় সময়ই মনোমালিন্য ছিল।
ঐ ঘটনার ২২ দিন আগে নয়ন তারা মেহেরপুর জেলার পিরোজপুর গ্রামে তার বাবার বাড়িতে যায় এবং গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাদ আসর বাবার বাড়ি থেকে স্বামী বাড়ি চুয়াডাঙ্গার সুমিরদিয়া আসে।
আগে থেকে পরিকল্পিতভাবে রাত ৯টার দিকে আনোয়ার বাড়ি ফিরে তার নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া জান্নাতুল আরা টুনির সামনে তার স্ত্রী নয়ন তারাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ দিয়ে বলে আজ তোকে খুন করে ফেলবো তুই কেন এসেছিস আমার বাড়ি এবং এক পর্যায়ে আনোয়ার একটি লোহার রড দিয়ে তার স্ত্রী নয়ন তারা কে হত্যার জন্য মাথায় আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। স্ত্রীকে পিটিয়ে খুন নিশ্চিত করে আনোয়ার। এসময় মেয়ে তার মাকে বাঁচাতে গেলে আনোয়ার তার মেয়ের মাথায় লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায়।
পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ মৃত নয়নতারার লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। তবে পুলিশ ঘাতক আনোয়ারকে আটকের জন্য জোর অভিযান অব্যাহত রেখেছে ।