রাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে চান্স পেয়ে ভর্তি হতে এসে শিক্ষার্থী আটক
মাহবুব বিল্লাহ,রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে ভর্তি হতে আসা আহসান হাবীব নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জালিয়াতির কথা স্বীকার করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর দপ্তর থেকে তাকে আটক করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাতে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন।
তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের নিকট এক শিক্ষার্থীকে হস্তান্তর করেছে। তাকে জিজ্ঞেসাবাদ চলছে।
জানা গেছে, ২০২২-২৩ সেশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি করে মেরিট পজিশন পায় আহসান হাবীব। মেরিটে পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগে ভর্তির সুযোগ হয়। আজ মায়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভর্তি হন এই শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। তার মায়ের নাম রেহেনা বেগম।
এদিকে ভর্তির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিউটের শিক্ষার্থী প্রাঙ্গণ তাকে শেরে বাংলা হলে নিয়ে গিয়ে চাঁদা দাবি ও মারধর করেন বলে অভিযোগ করেছে আহসান হাবীব।
ওই শিক্ষার্থীর মা রেহেনা বেগমের দাবি, দুপুরে ভর্তির পর কয়েকজন এসে আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। আমি খোঁজাখুঁজি করে ছেলের সন্ধান না পেয়ে প্রক্টর দপ্তরে আসি। এরমধ্যে বাড়িতে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি করে প্রাঙ্গন নামের এক ছেলে। তারা জানায় টাকা না দিলে আমার ছেলেকে ছাড়বে না। সন্ধ্যায় প্রক্টর দপ্তরে আমার ছেলেকে নিয়ে আসা হয়।
জালিয়তির কথা স্বীকার করে আহসান হাবীব জানান, প্রাঙ্গণের সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষায় ৪ লাখ টাকায় প্রক্সির চুক্তি হয়। এজন্য আগে তিনি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়েছি। ৪০,০০০ টাকা বাকি আছে। তাই আজ ভর্তির পর প্রাঙ্গণ ও কিছু ছেলে মিলে আমাকে শেরে বাংলা হলে নিয়ে যান এবং তিন লাখ টাকা দাবি করেন। বাড়িতে ফোন দিয়ে টাকা নিতে মারধরও করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। এসময় শেরে বাংলা হলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ ছিলেন বলেন জানান তিনি।
জানতে চাইলে এই শিক্ষার্থীর বাবা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রাঙ্গণ পরিচয় দিয়ে এক ছেলে আমার নিকট তিন লাখ টাকা দাবি করেছে। পরে জানতে পারি সে নাকি আমার ছেলেকে ভর্তি করিয়েছে।
চাঁদা দাবির ব্যাপারে জানতে প্রাঙ্গণের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অভিযোগের ব্যাপারে রাজু আহমেদ বলেন, প্রাঙ্গণ ও সনেট দুজন ওই ছাত্রকে নিয়ে আমার হলে আসেন। তারা জানায় এই ছেলে প্রক্সি দিয়ে ভর্তি হয়েছে। এর নিকট চুক্তির টাকা পাব। সেটা তোলা লাগবে। তখন তারা হল ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা দাবি করে। এব্যাপারে আমি জড়িত নই।
এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এ শিক্ষার্থী স্বীকার করেছে সে জালিয়াতি করে ভর্তি হয়েছে। আমরা তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি। তারা তাকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে। যারা এটার সাথে জড়িত আছে উপযুক্ত প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধে ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।