প্রিয় শিক্ষককে হেলিকপ্টারে ঘুরিয়ে বিদায় দিল প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
ব্যুরো চীফ, কুমিল্লা: হেলিকপ্টারে ঘুরিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা ও ফুল ছিটিয়ে প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাল বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। রবিবার সকালে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আবদুল্লাহপুর হাজী আমীর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. হারুনুর রশীদকে এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ওই দিনই তাঁর শেষ কার্যদিন ছিল। দীর্ঘ ৩০ বছর পর শিক্ষকতা শেষে অবসরে গেলেন এই শিক্ষক। বিদায়ী শিক্ষক মো. হারুনুর রশীদ দেবিদ্বার উপজেলার ভিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত ডা. আবু মুসার ছেলে। তিনি ১৯৯১ সালের ৮ জুন ওই বিদ্যালয়ে বিএসসি পদে শিক্ষকতা শুরু করেন।
প্রিয় এই শিক্ষককে বিদায় জানাতে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এই রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সকালে হেলিকপ্টারে প্রিয় স্যারকে নিয়ে বিদ্যালয় এলাকায় বেশ কয়েকটি চক্কর দেন তারা। তার পরই গাড়িবহরে করে স্যারকে নিয়ে আসেন বিদ্যালয় মাঠের সংবর্ধনা মঞ্চে। সেখানে তাঁকে দেয়া হয় ফুলেল সংবর্ধনা।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. জাকির হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক মো. আবুল খায়ের, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন, ইউপি সদস্য মো. আনিছুর রহমানসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ।
প্রাক্তন শিক্ষার্থী লুকস গ্লোবাল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, স্যারের হাত ধরে এ অজপাড়া গায়ের একটি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা নিয়ে শত শত শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্যারের বিদায় দিনে আমরা চেয়েছি উপযুক্ত সম্মানের মাধ্যমে স্যারকে চিরস্মরনীয় একটি দিন উপহার দিতে। ৩০ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়ানো একজন মানুষ গড়ার কারিগড়কে তার শেষ কর্মদিবসে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং এলাকাবাসী ব্যতিক্রমী আয়োজনে সম্মান জানানোর চেষ্টা করেছে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষক মো. হারুনুর রশীদ আবেগময় বক্তব্যে বলেন, বিদায়ের এ দিনটির কথা আমি কখনই ভুলব না। এ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার আলো নিয়ে আজ অনেকেই দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত, আলোকিত মানুষ। এটাই আমার দীর্ঘ ৩০ বছরের শিক্ষকতার স্বার্থকতা। আমি সকলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করছি।
আব্দুল্লাহপুর হাজী আমীর উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. জাকির হোসেন মোল্লা বলেন, এটা স্যারের পাওনা সম্মাননা। আজকের দিনটি আমাদের জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। স্যার আমাদের জন্য যা করেছেন, আমরা স্যারের জন্য সে তুলনায় সামান্যই সম্মান দেখাতে পেরেছি।