কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্ছিত
ব্যুরো চীফ, কুমিল্লা: কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় ওই দুই সাংবাদিককে মারধর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয় দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ডাক্তার ও তার সহযোগীরা।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিকরা হলেন- যমুনা টিভির কুমিল্লা ব্যুরোর প্রধান রফিকুল ইসলাম খোকন চৌধুরী এবং ভিডিও সাংবাদিক কামরুল হাসান।
লাঞ্ছিত হওয়া সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম খোকন চৌধুরী বলেন, কুমিল্লায় সুমাইয়া আক্তার সুমি নামে এক শিশু গৃহকর্মী নির্যাতনের শিকার হওয়ায় সংবাদ সংগ্রহ করতে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। এসময় সাংবাদিক কামরুল হাসানকে ভিডিও ধারণ করতে বাঁধা দেন ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবু জাফর সানি। এসময় চিকিৎসককে অনুরোধ করি, তারা যে অসহায় এক শিশুর চিকিৎসা দিচ্ছেন, তার একটু ভিডিও ধারণ করার। তাতেও বাঁধা দেন ডা. আবু জাফর সানি ও তার লোকজন। পরে তার লোকজনসহ ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয় আমাদের।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর জানে আলম নামে এক ভুক্তভোগী তার স্ট্রোক করা মাকে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ১১নং মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করলে কর্তব্যরত ইন্টার্ন ডাক্তার ফয়সাল, সাকিবসহ ৩/৪ জন মিলে হামলা করে। পরে এ ঘটনায় স্বজনরা হাসপতাল পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেন।
এর আগেও গত ৮ জুন কুমেক হাসপাতালে নবজাতক শিশু বাচ্চার নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করাতে বুড়িচং উপজেলার সাদকপুর থেকে আসেন মোস্তাফিজ। বাচ্চাকে ইমার্জেন্সি বিভাগে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার রেফার করে নবজাতক ওয়ার্ডে। রোগীর বাবা মোস্তাফিজ বাচ্চাকে নবজাতক ওয়ার্ডে আনার পর দেখতে পান ওয়ার্ডে নেই কোন ডাক্তার। পরে কুমেক পরিচালক ডা. আজিজুর রহমান এসে রোগীকে দেখে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সবাইকে ডাক দেয়। কিন্তু পরিচালক বলে যাওয়ার পরেও বাচ্চাটি ৪০ মিনিট ডিউটি ডাক্তারের টেবিলে শোয়ানো ছিলো। বিষয়টি পরিচালককে অবগত করলে ইন্টার্ন কিছু ডাক্তার বাচ্চার বাবা মোস্তাফিজের উপর অনেক চড়াও হয়ে তাকে মারধরের হুমকি দেয়।
তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ:
যমুনা টিভির সাংবাদিক খোকন চৌধুরীসহ দুই সাংবাদিকের উপর কুমেক হাসপাতালের চিকিৎসক কর্তৃক হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কুমিল্লা জেলার সভাপতি ইয়াসমীন রীমা ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা এমরান। এক বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।