নির্যাতনের পর শিশু গৃহকর্মীকে বাথরুমে বন্দি করে রাখার অভিযোগ, গৃহকর্ত্রী গ্রেফতার
ব্যুরো চীফ, কুমিল্লাঃ কুমিল্লায় নির্যাতনের পর সুমী নামের এক শিশুকে বাথরুমে আটকে নির্যাতন করার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শিশু সুমিকে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ উদ্ধার করে কুমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী ফারহানা ইসলামকে রাতেই পুলিশ আটক করে। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সদর দক্ষিণ থানার ওসি আলমগীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আশিকুর রহমান নামের এক প্রতিবেশী বাদী হয়ে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা আলম দম্পতিকে আসামি করে সদর দক্ষিণ থানায় মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, প্রতিবেশীরা মঙ্গলবার রাতে সুমির চিৎকার শুনে পুলিশে খবর দেয়। রাতে তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ভর্তি করা হয়। তার চোখ-মুখসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর জাঙ্গালিয়া এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ফারহানা ইসলামের বাসায় কয়েক বছর ধরে কাজ করছে সুমী। তবে প্রায়ই তার উপর নির্যাতন চালান এই দম্পতি। মঙ্গলবার নির্যাতন শেষে বাথরুমে আটকে রেখে বাইরে যান এ দম্পতি। তখন সুমী চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রায়ই ওই বাসা থেকে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। মঙ্গলবার রাতে দীর্ঘ সময় ধরে কান্নার শব্দ শুনে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নারী ও শিশু কোর্টের অ্যাডভোটেক ফাহমিদা জেবিন আহমেদ বলেন, শিশু নির্যাতনের মতো জঘন্য কাজ আর কিছু হতে পারে না। এসব মামলায় অনেক সময় আদালতে সাক্ষীদের অনিয়মিত উপস্থিতির প্রবণতা ও অপরাধী প্রভাবশালী হওয়ায় বিচারকার্যে ধীরগতি দেখা দেয়। এছাড়া কিছু অসাধু তদন্ত কর্মকর্তার কারণে মামলাগুলোতে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে অপরাধীরা পার পেয়ে যান। শিশু নির্যাতন রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
কুমিল্লায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, শিশু গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অভিযান চালিয়ে লাকসাম থেকে গৃহকর্ত্রী ফারহানা ইসলামকে আটক করে থানায় আনা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে একজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকীজনকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।