বাঁশের আড় বেয়ে উঠতে হয় ৩২ লাখ টাকার সেতুতে
সাজ্জাদুল তুহিন, মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় কালিকাপুর ইউপির চকনারায়ণ গ্রামে রাস্তা না থাকায় ৬ বছর ধরে বাঁশের আড় বেয়ে উঠতে হয় সেতুতে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও এই গ্রামের মধ্যে দিয়ে নেই কোন সড়ক। ফলে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় গ্রামের মানুষকে। বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনা জনপ্রতিনিধিদের। ফলে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চকনারায়ণ গ্রামে। ৬ বছর আগে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ হলেও সড়ক না থাকায় সেখানে এখন কাপড় শুখানো আড় ও গরুর গোবর দিয়ে তৈরি করা জ্বালানি শুকানোর কাজ চলছে।
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কালিকাপুর ইউনিয়নে মোজাম্মেলের বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় খালের উপর দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতায় ২০১৭-১৮ সালে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের ৩২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩৮ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, খালের উপর সড়ক বিহীন একটি সেতু দ্বাঁড়িয়ে আছে। বাঁশের আড় বেয়ে সেতু পর্যন্ত পৌঁছালে দেখা যায়, যাতায়াত না থাকায় সেতুর উপরে কাপড় ও গরুর গোবর শুকানোর কাজ চলছে। কয়েক বছরেই নষ্ট হতে বসেছে সেতুটি।
স্থানীয়রা জানান, সেতু নির্মাণের ৬ বছর পেরিয়ে গেছে। সড়ক না থাকায় সেতুটির সঠিক ব্যবহার হয়না। সেতুটি তৈরির পর সড়ক নির্মাণের কথা ছিলো। পরে আর সড়ক নির্মাণের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। স্থানীয়রা আরও বলেন, শুধুমাত্র লাখ লাখ টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অপরিকল্পিত ভাবে সড়ক বিহীন খালের উপর সেতুটি নির্মাণ করেছেন কর্তৃপক্ষ। মাত্র ৬ বছরে সেটিও নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
খালের পাড়ে বসবাস কারি গৃহীনী শরিফুল বেগম বলেন, আমাদের এখানে ব্রীজ আছে সড়ক নেই। সড়ক না থাকায় ছোট বাচ্চারা বর্ষায় স্কুলে যেতে পারেনি। অসুস্থ রোগী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়ে পড়েছি আরো বিপদে। ব্রীজ থাকার পরও বাশেঁর আড় দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।
গ্রামের মাহবুব ইসলাম বনিজ জানান, সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় তাদের আশা ছিল জনভোগান্তি দূর হবে কিন্তু এখন উল্টো তাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এখানে যদি চলাচলের উপযোগী সড়ক করে দেয় হয় তাহলে অন্তত ১০ হাজার মানুষ এই সুবিধা ভোগ করবে। এই পথ দিয়ে সহজে চলাচল করতে পারবে সবাই। আমাদের দাবি দ্রুত এখানে সড়ক নির্মাণের। সড়ক না থাকায় ফসল তোলা থেকে বাজারজাত করা খুবই কষ্টকর।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, সেখানে রাস্তা থাকার কথা। খোঁজ নিয়ে রাস্তা না থাকলে রাস্তা করে দেওয়া হবে।