কেরানীহাটে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই জবাই করা হচ্ছে রোগাক্রান্ত পশু
রমজান আলী, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি: দক্ষিণ চট্টগ্রামে সাতকানিয়া উপজেলায় কেরানীহাট বাজারে বাসি মাংস বিক্রি ও ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বেশি দামের ভালো মাংসের সাথে মাথার ও ছাঁটাইয়ের মাংস চর্বি মিশিয়ে বিক্রি করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রতিনিয়ত ক্রেতা সাধারণ মাংস কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ থাকার পরও এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা প্রতারণার চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাংস ব্যবসা।
শনিবার সকালে সরেজমিনে কেরানীহাট মাংস বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বেশিরভাগ দোকানগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই জবাই করা হচ্ছে রোগাক্রান্ত পশু। দোকানগুলোতে টাঙ্গানো নেই কোনো মূল্য তালিকা। তাছাড়া এসব দোকানগুলোর বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে ওজনে কম দেয়ার।
রাজিব নামে একজন ক্রেতা বলেন, আমি কেরানীহাট মাংসের দোকান থেকে এক কেজি মাংস কিনি। বাড়িতে গিয়ে মেপে দেখি আটশত গ্রাম হয়েছে। তাছাড়া তিনি আরও জানান, প্রতিনিয়ত অসাধু মাংস ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের ঠকাচ্ছে।
তাছাড়া এসকল মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রায়ই পানি দিয়ে মাংসের ওজন বাড়ানোর অভিযোগও পাওয়া যায়।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে এ নিয়ে কথা বললে তারা বিষটি সত্য নয় বলে জানান।
তাসলিমা আক্তর নামে এক ক্রেতা বলেন, আমি(২৭অক্টোবর) সকালে কেরানীহাট বাজারে গরুর মাংস কিনতে যান। প্রতিটি ব্যবসায়ী মাংসের প্রতি কেজি সাড়ে সাতশ টাকা দাবি করেন। দুই দোকান ঘুরে একটি থেকে দেড় কেজি মাংস কিনি। পরে বাড়িতে গিয়ে ওজন করে দেখি এক কেজি চারশত গ্রাম। মাংসের সাথে প্রায় এক কেজি চর্বি। মাংস ব্যবসায়ীর সাথে প্রতিবাদ করলে সেই টাকা ফেরত দেন। তিনি আরো বলেন আমি যখন মাংস নিয়ে দোকানে আসি তখন দোকানদার'রা আমাকে অস্বীকার করে বলেন দোকানের নাম বলেন আমি বলেছিলাম আপনাদের দোকানে তো নামের কোনো সাইনবোর্ড নাই, তাহলে আমি কিভাবে দোকানের নাম বলবো। তখন তারা আমার সাথে খারাপ আচরণ করেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তাদের দোকানের কোন নাম বা সাইনবোর্ড এর কোন কিছুর চিহ্ন নাই।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, কেরানিহাট বাজারে মাংসের দোকানে মাংস ওজনে কম দেয়া, এটা নতুন কিছু নয়। প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটেছে। মাংস দোকানি কেউ পাল্লায় কারসাজি করে। কেউ আড়ালে পাল্লায় অন্যকিছু রেখে দেয়। এভাবে প্রতিনিয়ত সাধারণ ক্রেতাদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ওই অসাধু মাংস ব্যবসায়ী।
সূত্র মতে, নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করে না, প্রাণি অধিদপ্তর ও স্যানিটারী ইন্সপেক্টর তত্ত্বাবধানে পশু জবাই করে ছাড়পত্র গ্রহণ করে মাংস বিক্রির বিধান রয়েছে। কিন্তু এর ধারে কাছেও নেই এখানকার মাংস ব্যবসায়ী। তার ইচ্ছেমতো রাতের আঁধারে অথবা ভোর সকালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করে মাংস বাজারে তুলে। মাংস ব্যবসায়ী আনোয়ার ও বেলালসহ সকল মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ।
এ বিষয়ে কেরানীহাট প্রগতি ব্যবসায়ী সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে শুনেছিলাম তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম। আমাদের কমিটির পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতকানিয়া উপজেলার স্যানিটারী ইন্সপেক্টর ছরোওয়ার কামাল বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।
প্রাণি অধিদপ্তর সাতকানিয়া উপজেলা কর্মকর্তা ডাং মিজানুর রহমান বলেন, আমরা অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে নিয়ে ব্যবস্থা নেব।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।