চুয়াডাঙ্গায় নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
মামুন মোল্লা, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : চুয়াডাঙ্গায় নবাগত পুলিশ সুপার জনাব আর এম ফয়জুর রহমানের সাথে জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ১৭ নভেম্বর তিনি চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে নবাগত পুলিশ সুপার জনাব আর এম ফয়জুর রহমান, পিপিএম-সেবা সভাপতিত্বে পুলিশ লাইন্সে সকাল সাড়ে ১১ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার ইলেট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণের সাথে পরিচিতিমূলক ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ রিয়াজুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান লালন (সদর সার্কেল), সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা, আবু জিহাদ ফকরুল আলম খাঁন (ডিআইও-১) চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান।
মতবিনিময় সভায় জেলায় নবাগত পুলিশ সুপার জনাব আর এম ফয়জুর রহমানকে স্বাগত জানিয়ে সাংবাদিক জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এ্যাড. মানিক আকবর, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচি সহ সাংবাদিক মামুন মোল্লা, ফাইজার চৌধুরী, জিসান আহম্মেদ, হুসাইন মালিক, কামরুজ্জামান চাঁদ, ইসলাম রকিব, সাংবাদিক রিফাত রহমান সহ অনান্য নেতৃবৃন্দরা এসময় বক্তব্য রাখেন।
নবাগত পুলিশ সুপার এসময় বক্তব্যে বলেন, গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বাংলাদেশের প্রাণপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও জাতির পিতার পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার সকলকে। আমি আমাদের চার জাতীয় নেতাকে স্মরণ করছি। যারা আমাদের জাতির জন্য অপরিসীম অবদান ছিল।
পুলিশ সুপার পদটি আমি জেলা পুলিশের প্রধান হিসেবে নয় বরং আমি গ্রহণ করেছি রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত সুমহান দায়িত্ব হিসেবে। চুয়াডাঙ্গার জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে জেলা পুলিশ সদস্যদের অবারিত চেষ্টা চলমান; সেই বিশাল কর্মক্ষেত্রের একজন সদস্য হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি এবং আমাকে এই সুযোগটি করে দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি এবং মাননীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
তিনি আরোও বলেন, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার হিসেবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব মেধা-মনন, সততা এবং নিষ্ঠার সাথে পালন করতে আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই জেলার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং অধিকতর সেবা প্রদান হবে আমার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কুইক রেসপন্স এবং সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলার ৫টি পুলিশ স্টেশন হবে আইনী সেবা প্রত্যাশীদের নির্ভরতার কেন্দ্রবিন্দু।
সাংবাদিক সমাজের দর্পণ। রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ। জনবল ও লজিস্টিকস স্বল্পতার কারণে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে লুকিয়ে থাকা সকল অপরাধ আর অপরাধীর খোঁজ পাওয়া পুলিশের একার পক্ষে দুঃসাধ্য। আপনাদের লেখনির মাধ্যমেই কেবল পুলিশ সমাজ বিরোধী কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ পেতে পারে। পুলিশ এবং সাংবাদিক পরস্পরের সহযোগী বন্ধু হিসাবে সত্যের সন্ধানে কাজ করে। পুলিশকে সমাজের আনাচে-কানাচে ঘটে যাওয়া অপরাধের সঠিক তথ্য দিয়ে সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ পুলিশকে সহযোগিতা করবেন এটাই আমার প্রত্যাশা।
অসীম সাহসিকতা, বীরত্ব, আত্মত্যাগের ইতিহাসকে ধারণ করে সেবার সুমহান ব্রত নিয়ে আমি এবং আমার টিম আপনাদের সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করণ এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমার চাকরির অভিজ্ঞতা, মেধা এবং প্রচেষ্টার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করতে সচেষ্ট থাকবো। আপনাদের সহযোগিতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং নির্বাচন আচরণ বিধিমালা মোতাবেক পুলিশের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ পালন করতে বদ্ধপরিকর। রাষ্ট্র, সংবিধান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে আমরা দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব, সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের এই দীপ্তপদের যাত্রায় আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
উক্ত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ রিয়াজুল ইসলাম, (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ); জনাব জাকিয়া সুলতানা, সহকারি পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল), চুয়াডাঙ্গা; জনাব আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, ডিআইও-১, ডিএসবি; জনাব মাহাব্বুর রহমান, অফিসার ইনচার্জ, সদর থানা, জেলা পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারগণ।
অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান।