টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টানা কয়েকদিনের তীব্র দাবদাহে টাঙ্গাইলে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সবচেয়েভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষজন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের না হলেও খেটে খাওয়া মানুষরা জীবিকার তাগিদে বের হয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। দাবদাহে সাধারণ মানুষ হাসফাঁস করছেন। তীব্র গরমের সাথে বারবার লোড শেডিংয়েও অতিষ্ঠ জনজীবন। এদিকে তীব্র গরমে ধান ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।
আজ শনিবার বিকেল ৩টায় টাঙ্গাইলে চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে টাঙ্গাইলের উপর থেকে মাঝারি ও তীব্র তাপদাহ কয়ে যাচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিং যেনো নিয়মে পরিণত হচ্ছে। এতে করে জনজীবনে জনজীবনে নাভিম্বাস হয়ে ওঠেছে। বিশেষ করে গরমে বৃদ্ধরা বিপাকে পড়েছেন। শহর এলাকায় দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পালা করে এলাকা ভিত্তিক দফায় দফায় বিদ্যুতের লোডশেডিং দেওয়া হয়। কিন্ত গ্রামের অবস্থা আরও ভয়াবহ। গ্রাম এলাকায় প্রায় সময়ই বিদ্যুৎ থাকে না। চলতি বোরো মৌসুমে চাষের জমিতে পানি সেচ দিতে না পারায় ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পরেছেন কৃষকরা। টানা কয়েকদিনের দাবদাহে তীব্র গরম সইতে না পেরে প্রশান্তির আশায় কেউ ডিপ মেশিনে গোসল করছেন, আবার কেউ ঘন ঘন ঠান্ডা পানি ও ডাব খেয়ে তৃষ্ণা মেটানোর চেষ্টা করছেন। স্বস্তি পেতে শ্রমজীবী অনেক মানুষ রাস্তার পাশে জিরিয়ে নিচ্ছেন, আবার কেউ কেউ হাতে মুখে পানি দিয়ে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রচণ্ড গরমে ডায়েরিয়া ঠান্ডা জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নানা বয়সী লোকজন। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
নিরবছিন্ন বিদ্যুতের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমানে গাছ লাগানোর দাবি জানিয়েছে সাধারণ জনগণ। সাধারণ জনগণ বলেন, তীব্র গরমে আমাদের জীবন যাপন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বাইরে চলাচল করতেও আমাদের কষ্ট হয়ে পড়েছে। ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই।
নিম্ন আয়ের মানুষরা বলেন, তীব্র গরমের কারণে লোকজন বাসা থেকে কম বের হচ্ছে। তবুও জীবনের তাগিদে আমাদের কর্ম করতে হচ্ছে। লোকজন কম থাকায় আমাদের আয়ও কম হচ্ছে।
কৃষরারা বলেন, তীব্র গরমে ধান ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এখন ধানের থোর আসার সময়। এ অবস্থায় ক্ষেতে পানি দিতে না পারলে ফলন ভালো হবে না। বিদ্যুতের কারণে ঠিক মতো মেশিন চালানো যাচ্ছে না। ক্ষেতেও পানি দেয়া যাচ্ছে না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিদ্যুতের কারণে তাদের লেখাপড়াও ঠিক মতো হচ্ছে না। এতে তাদের পড়া লেখার ক্ষতি হচ্ছে অনেক।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, জেলায় চলতি বছরের আজ সর্বোচ্চ ৪০.০২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আদ্রতার পরিমান ছিলো ২০ ভাগ। গত ১ সপ্তাহ ধরে জেলায় ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে। এতে জেলায় মাঝারি থেকে তীব্র তাপদাহ বয়ে চলছে। আগামী আরো দুই তিন দিন দাবদাহ অব্যহত থাকবে। এ মুহুতে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।
তিনি আরো বলেন, গতকাল শুক্রবাও জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিলো।