ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশার সম্পদ বেড়েছে ২১ গুণের বেশি
২০০৮ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে রাজশাহী-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা। এবারও তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। গত ১৫ বছরে বামদলের এই নেতার ১৫ লাখ টাকার অর্থ-সম্পদ বেড়ে হয়েছে ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার বেশি, যা ২১ গুণের বেশি।
নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমন তথ্য। হলফনামা অনুযায়ী, ২০০৮ সালে ফজলে হোসেন বাদশার নগদ ও ব্যাংক মিলে মোট অর্থ ছিল ৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। বিয়েতে উপহার পাওয়া ৫০ ভরি সোনা, আসবাব, গাড়ি মিলে সম্পদ ছিল ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার। অর্থ ও সম্পদ মিলিয়ে মোট সঞ্চয় ছিল ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। এর বাইরে ছিল স্ত্রীর নামে ৫ কাঠা জমি।
২০২৩ সালে হলফনামায় নগদ ও ব্যাংক মিলে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ৭০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি ও ৪ লাখ টাকার বাড়ির আসবাব। এর বাইরে আছে রাজশাহীতে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের বহুতল খন্দকার মার্কেট, ঢাকার উত্তরায় ৩৭ লাখ ২৭ হাজার মূল্যের ৫ কাঠা জমি। অর্থ ও সম্পদ মিলিয়ে মোট সঞ্চয় ৩ কোটি ২৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
পরিসংখ্যান বলছে, সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর ১৫ বছরে বাদশার অর্থ-সম্পদ বেড়েছে ২১ গুণের বেশি। এছাড়া সম্পদের প্রকৃত দামও কমিয়ে দেখানোর অভিযোগ আছে ফজলে হোসেন বাদশার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় রাজনীতিকদের মতে, একজন সংসদ সদস্যের এই সম্পদ বৃদ্ধির হার অস্বাভাবিক। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, একজন এমপি তিনি মহান সংসদে নীতি–নির্ধারকের ভূমিকা পালন না করে উনি ডাকাতের ভূমিকা পালন করেন। অর্থবৃত্তের সম্পদশালী হয়ে ওঠেন। দেশ এবং জাতি এই ধরনের সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে কিছু পাবে না।
স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি না থাকায় এমনটি ঘটছে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহীর সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখন রাজনীতি হয়েছে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার। বৈধ–অবৈধ পন্থায় সম্পদ দখলের একটি অস্ত্র। সেই জায়গা থেকে তুলনা করলে হলফনামা যে উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল সেটি তো আর বোধহয় কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলেছে।