ডেমরায় বাস-মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রবাসীর ছেলে নিহত
মোঃ হারুন অর রশিদ, ডেমরা প্রতিনিধি: ডেমরায় থেমে থাকা যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে হাইএস মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম সাকিব (২০) নামে সৌদি ফেরত এক প্রবাসীর ছেলের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
সাকিব কুমিল্লার দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজের অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বুধবার দিনগত রাতে ধানমন্ডি সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আইসিইউতে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওই রাতেই ডেমরা থানায় গ্লোরি পরিবহন নামে বাসের চালক জাফর খাঁনের (২৫) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মৃতের মামা মো. এনামুল হক। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন জাফর। চালক জাফর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানাধীন দক্ষিণ মাসাব গ্রামের ফরিদ খাঁনের ছেলে।
এদিকে মৃতের বাবা কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার গৌরসার গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে শহীদুল ইসলাম (৪১) গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন গ্রামের বাড়িতে।
এদিকে ছেলের মৃত্যুতে সৌদি ফেরত শহীদুল শোকে পাথর হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন বাদী ও মৃতের মামা এনামুল। দেশে ফিরে দুর্ঘটায় ছেলের মৃত্যু দেখতে হবে এমনটি ভাবতেই পারছেন না সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শহীদুল। ক্ষণে ক্ষণে মূর্ছা যাচ্ছেন নিহত সাকিবের বাবা-মা। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও শোকে কাতর বলে জানা গেছে। সাকিবের লাশ বাড়ি যেতেই এলাকায় শোকের মাতমে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে।
কান্নাভরা কন্ঠে অসুস্থ শহীদুল মোবাইল ফোনে বলে, ছেলের এমন অকাল মৃত্যুতে আমার সব সম্পদ যেন চুরমার হয়ে গেল। সড়কেই নিভে গেল আমার ভবিষ্যৎ সব স্বপ্ন। ছেলেকে শিক্ষিত করে ভাল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রবাসে দিনরাত পরিশ্রম করেছি। দেশে আসাই আমার চরম ভুল ছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় আমার আনা স্বর্ণের বিস্কিট হারিয়ে কষ্ট পাইনি কিন্তু ছেলের মৃত্যু আমাকে মেরে ফেললো। আমি জীবিত থেকেও যেন মৃত হয়ে গেলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেমরা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সুব্রত কুমার পোদ্দার বলেন, এবারের সড়ক দুর্ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক যা হৃদয় বিদারক। দ্রুত বাস চালককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫ টায় ডেমরার মীরপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্নে বাস ও হাইএস মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন গুরুতর আহত হন। এ সময় প্রবাসী শহীদুল ইসলাম (৪১), তার ছেলে সাকিব (২০) ও হাইএস চালক আল আমিন (৩৫) গুরুত্বর আহত আহত হন। তাদের ৩ জনকেই পর্যায়ক্রমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। পরে সাকিবের অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ধানমন্ডিতে নেওয়া হয়।