পেঁয়াজ নিয়ে চট্টগ্রামে লঙ্কাকাণ্ড, সকাল-বিকাল মূল্যের ছন্দপতন; দাম ২২০ টাকা
এস এম আকাশ, ব্যুরো প্রধান, চট্টগ্রাম: গতকাল শুক্রবার সকালে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। দুপুরের দিকে এক আদেশে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণায় এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে আজ শনিবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল ১৫০ টাকা। দুপুরের পর সেই পেঁয়াজের দাম এক লাফে ২২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কত টাকায় গিয়ে দাম ঠেকে তা বলা যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় পেঁয়াজ বিক্রি করছে না ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের আড়তগুলোতে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ রয়েছে।
শনিবার সকালে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবর জানা গেছে। সকালে বিভিন্ন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহেও ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ টাকা। শুক্রবার সন্ধ্যার পর পাল্টে যায় পেঁয়াজের বাজারের দৃশ্য। হঠাৎ করে বেড়ে যায় কেজি প্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা। বাজারের খবর নিয়ে জানা গেছে, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। আজ দুপুরে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।
এই দাম বাড়ার কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত পেয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছে। এমন খবর আসতে না আসতেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। পাইকারি বাজারে পেয়াজের দাম বেড়েছে। তাই দ্রুত খুচরা বাজারেও বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। কোনো আদেশ নিষেধ নয়, নিজেরাই বাড়তি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেওয়া এক আদেশে, ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত। মূলত দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারত সরকার আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানি নিষিদ্ধ করে।
জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি নাজের আহমদ বলেন, এই মুহূর্তে দেশের পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। যতবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে, দেশে ঠিক ততবার অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছে। এবারও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হয়েছে। পাশাপাশি নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তাই তদারকির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হয় অসাধু চক্র ফের ভোক্তার পকেট কাটবে।
বিজ্ঞপ্তিতে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) জানায়, ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজের রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনুরোধের পর কেন্দ্রীয় সরকার থেকে দেওয়া অনুমতির ভিত্তিতে ফের পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।